• 23 Chamelibagh, Dhaka-1217
  • +88-02-9333543
  • bfdrms@gmail.com

Category Page: Publication

বাংলাদেশ ২৫ মার্চ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চায়

ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। মাত্র নয় মাস সময়ে পৃথিবীর কোনো জাতি এত তাজা প্রাণ আর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভ করেনি। পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণহত্যা অত্যন্ত স্মরণীয় একটি ঘটনা। তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের মানুষের উপর গণহত্যা চালায়। তাদের সেই নিষ্ঠুর গণহত্যা পৃথিবীর সকল গণহত্যাকে ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে ১৯৭১ সালে বিশ্ববিবেক জাগ্রত হলেও সময়ের ব্যবধানে তা তলিয়ে যায়। আজ সময় এসেছে বাংলাদেশের গণহত্যার পুনর্মূল্যায়নের। বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা পৃথিবীবাসীর দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হলে প্রকারান্তরে তা পৃথিবীর দেশে দেশে সংঘটিত গণহত্যাগুলোও বিশ্ববিবেক আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশের গণহত্যার বিপক্ষে প্রথম যিনি দৃঢ়তার সঙ্গে রুখে দাঁড়ান- তার নাম পদগোর্নি। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও ভারতবর্ষের ঋণ মনে রেখেও বলা যায়Ñ তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নের শক্তিমান নেতা যখন পাকিস্তানিদের উদ্দেশ্যে বললেন- ÔStop GenosideÕ তখন বিশ্ববাসী বাংলাদেশের গণহত্যাকে সহানুভূতির দৃষ্টি দিয়ে দেখতে শুরু করে। ‘জেনোসাইড’ বলতে যে ভয়ংকর নৃশংসতা বোঝায়, তা মোকাবিলায় বিশ্বসমাজের অবস্থান প্রকাশ পায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের কঠোরতায়। গণহত্যার শিকার মানুষদের স্মরণ ও গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘ ২০১৫ সালে সর্বসম্মতভাবে প্রতিবছর ৯ ডিসেম্বর গণহত্যা স্মরণ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জেনেভায় জেনোসাইড কনভেনশন গৃহীত হয়েছিল, সেই দিনটিকে তাই জাতিসংঘ বেছে নিয়েছে বিশ্বব্যাপী গণহত্যা স্মরণ ও প্রতিরোধের দিন হিসেবে। পাশাপাশি জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস পালন করছে গণহত্যার শিকার কয়েকটি জাতি। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে সংঘটিত হলোকাস্ট, আর্মেনিয়া কিংবা রুয়ান্ডার গণহত্যা স্মরণে রয়েছে আলাদা জাতীয় দিবস।
২০১৭ সালে জাতীয় গণহত্যা দিবস বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পালিত হয়। এখন বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন মহলে। বিংশ শতাব্দীর ¯œায়ুযুদ্ধ বাংলাদেশের গণহত্যায় ভূমিকা রাখে। আমেরিকার সঙ্গে চীনও সুর মেলায় পাকিস্তানিদের সঙ্গে। শক্তিশালী ওই দুই দেশ যদি পাকিস্তানিদের অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে, বন্ধুত্বের খাতিরে পাকিস্তানিদের এত আস্কারা না দিত তাহলে পাকিস্তানিরা বাংলাদেশের বুকে এভাবে গণহত্যা চালাতে পারতো না। আমেরিকার সপ্তম নৌবহর যদি রাশিয়ার হুমকির মুখে না ফিরে যেতোÑ তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কত ভয়াবহ হতো তা চিন্তা করতেও শরীর শিউরে ওঠে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যা বাঙালি জাতি ও হিন্দু ধর্মসম্প্রদায়ের মানুষদের নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়। গণহত্যার একেবারে সূচনায়, যখন এর লক্ষণগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি, সেই সময় ২৮ মার্চ ঢাকায় মার্কিন কনসাল আর্চার কে ব্লাড ওয়াশিংটনে প্রেরিত তাঁর গোপন বার্তার শিরোনাম দিয়েছিলেন ‘বেছে বেছে গণহত্যা’ বা ‘সিলেকটিভ জেনোসাইড’। বাংলাদেশের গণহত্যার সংবাদ ও ছবি বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার জন্য ওয়াশিংটন পোস্টের যে সাংবাদিককে ধন্যবাদ দিতেই হয়, তার নাম সাইমন ড্রিংক। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেভাবে বাংলাদেশের গণহত্যার কথা বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রচার করেছেন এবং জনমত সৃষ্টি করতে সহযোগিতা করেছেন তার কোনো তুলনা নেই। বাঙালি জাতি তার কাছে চিরদিন ঋণী হয়ে থাকবে। মে মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের অধিকৃত অঞ্চল ঘুরে অ্যান্থনি মাসকারেনহাস ভয়াবহতার যে ছবি মেলে ধরেছিলেন বিলেতের সানডে টাইমস পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় সেই লেখার শিরোনাম দেওয়া হয়েছিল ‘জেনোসাইড’, সে প্রতিবেদন আলোড়ন তুলেছিল দুনিয়াব্যাপী। নয় মাসজুড়ে আরও অনেক প্রতিবেদনে গণহত্যার মর্মস্পর্শী বহু বিবরণ প্রকাশ পেয়েছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সংবাদের প্রাক্কালে পাওয়া গেল বুদ্ধিজীবী হত্যাকা-ের মতো নিষ্ঠুরতার বিবরণ, যা ছিল জাতি ধ্বংসের লক্ষ্যে চূড়ান্ত আঘাত।
অজ¯্র তথ্য-প্রমাণ-সংবাদ রয়েছে বাংলাদেশের গণহত্যা ঘিরে, নানাভাবে আলোচিত হয়েছে এর নৃশংসতা। এই গণহত্যা অস্বীকারের কোনো উপায় ছিল না, তারপরও অস্বীকারের চেষ্টা নানাভাবে দেখা গিয়েছিল এবং এখনো তার দেখা মেলে। একাত্তরের বাংলাদেশ তৎকালীন বিশ্ব গণমাধ্যমে, সিনেটে পার্লামেন্টে, সভা-সমাবেশ-মিছিলে বড়ভাবে জায়গা পেলেও বিজয়ের পর খুব দ্রুতই আলোচনা থেকে হারিয়ে যায় বাংলাদেশ, গণহত্যা তলিয়ে যায় বিস্মৃতিতে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে একাত্তরের গণহত্যার পুনঃপ্রতিষ্ঠা খুব জরুরি। তবে তার চেয়ে গুরুত্ববহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায় স্মরণ করিয়ে দেওয়া। আমাদের মনে পড়ে ১৯৭৩ সালের জুলাই মাসের আরেকটি ঐতিহাসিক ক্ষণ, যখন জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়েছিল ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) অ্যাক্ট’। গণহত্যাকারীদের বিচারের জন্য প্রথম বিধিবদ্ধ আইন। সেদিন সংসদে প্রদত্ত সমাপনী ভাষণে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্ব তুলে ধরে আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর বলেছিলেন, ‘আমরা এদের (যুদ্ধাপরাধীদের) মনে করি শুধু বাংলাদেশের শত্রু নয়, মানবতার শত্রু। সেই হিসেবে আমরা তাদের বিচার করতে যাচ্ছি। সেই দায়িত্ব শুধু বাংলাদেশের নয়, সমগ্র বিশ্বের সভ্য মানবসমাজের কর্তব্য এদের নিন্দা করা, ঘৃণা করা, ধিক্কার দেওয়া।’
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর অ্যাডহক ভিত্তিতে গঠিত দুই বিচারশালা, নুরেমবার্গ ও টোকিও আদালত ছিল মানবজাতি ও মানবসভ্যতার বিরুদ্ধে সংঘটিত ভয়াবহ ও ব্যাপক পাশবিকতার বিচারে অভিনব পদক্ষেপ। এই অভিজ্ঞতার নির্যাস মেলে ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনে, যেখানে অপরাধসমূহ সংজ্ঞায়িত হয় জেনোসাইড, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ হিসেবে। আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত এই সংজ্ঞার ভিত্তিতে যথাযথ আইনি বিধি অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠা পাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতÑ এমনটাই ছিল প্রত্যাশা। তবে নানা কারণে সেই প্রত্যাশা-পূরণ আর ঘটেনি।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গণহত্যার বিষয়ে বিশ্বসমাজের করার কিছু ছিল না। সেই সময় গণহত্যা বিচারে না ছিল আইন, না ছিল আদালত, না ছিল গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘের কোনো উদ্যোগ। তাই বাংলাদেশের যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘে তুমুল বিতর্ক হয়েছে, শরণার্থী দুর্গতির মানবিক দিক নিয়ে ছিল আলোচনা ও উদ্যোগ, কিন্তু গণহত্যা ও তা প্রতিরোধ নিয়ে জাতিসংঘ ছিল নিশ্চুপ। এ ক্ষেত্রে স্মরণ করা যেতে পারে গণহত্যা অধ্যয়নে অগ্রণী অধ্যাপক অ্যাডাম জোন্সের উক্তি, যিনি দ্য স্কোর্জ অব জেনোসাইডসহ আরও বহু বইয়ের প্রণেতা। যা দেশে দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পাঠ্যপুস্তক হিসেবে স্বীকৃত। ২০১৪ সালে ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে প্রদত্ত বক্তৃতায় তিনি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গুরুত্ব মেলে ধরে বলেন, ‘এটা (আইসিটি-বিডি) ছিল গণহত্যার বিচারের বিধিবদ্ধ প্রয়াসে অগ্রগণ্য, ইতিহাসের প্রথম পদক্ষেপ যেখানে ‘জেনোসাইড’ শব্দবন্ধ মুখ্য ও কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।’ আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করে জোন্স বলেন, ‘যুগোস্লাভিয়া, রুয়ান্ডা, কম্বোডিয়া ও সিয়েরা লিওনে প্রতিষ্ঠিত অ্যাডহক ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর আগে নয়, কয়েক যুগ আগে বাংলাদেশ এমন পদক্ষেপ নিয়েছিল। তা সত্ত্বেও আইসিটি (বাংলাদেশ) খুব স্বল্পই পরিচিতি পেয়েছে এবং বাংলাদেশের গণহত্যা তুলনামূলক গণহত্যা অধ্যয়ন বিশেষজ্ঞ, বিশেষভাবে আইন বিশেষজ্ঞদের দ্বারা খুব সামান্যই বিবেচিত হয়েছে।’
বাংলাদেশের গণহত্যা যে বিশ্বজনীন স্বীকৃতি পায়নি, সেটা নিয়ে গণহত্যার শিকার জাতি হিসেবে আমাদের খেদ থাকাটা স্বাভাবিক। এখানে স্মরণ করতে হবে এই সমস্যা যতটা না বাংলাদেশের তার চেয়ে বেশি মানবসভ্যতার। গণহত্যার শিকার মানুষদের প্রতি বিশ্বসমাজ দায়বদ্ধ, এই দায়মোচনে বিশ্বসমাজের ব্যর্থতার বিচার-বিশ্লেষণ জরুরি। তবে কোনো উচ্চ মহল বা সংস্থায় আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির দেন-দরবারের চেয়েও বড় দিক হলো বিশ্বসমাজকে তাদের দায় স্মরণ করিয়ে দেওয়া।
গণহত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যর্থতার অবসান ঘটেছে ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে। ট্রাইব্যুনালে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিধিবদ্ধভাবে একের পর এক বিচার সম্পন্ন এবং রায় কার্যকর হচ্ছে। প্রায় চার দশক পরে হলেও যুদ্ধাপরাধীদের অপরাধের বিচারে বাংলাদেশ তৈরি করল উদাহরণ।
বাংলাদেশ বহু বাধা পেরিয়ে ইতিহাসের সঙ্গে বোঝাপড়া শেষ করলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ ক্ষেত্রে বহু পিছিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের বিচার গুরুত্বপূর্ণ হলেও এই বিচারের আওতামুক্ত রয়েছে পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীরা। পাকিস্তানের ১৯৫ জন যুদ্ধবন্দী যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযোগনামা তৈরি হয়েছিল তাদের ছাড়িয়ে নিতে প্রবল চাপ তৈরি করেছিল পশ্চিমা ক্ষমতাবান মহল, চীনা নেতৃত্ব ও মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল রাজন্যবর্গ। বস্তুত তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছিল অশুভ আঁতাত। আর এর ফলে পার পেয়ে যায় গণহত্যাকারীরা। আজ তাই তলিয়ে দেখতে হবে কেন নয় মাসজুড়ে বাংলাদেশে অবাধে গণহত্যা পরিচালনা করতে পারল পাকিস্তানিরা, কেন পরাজিত হয়ে নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণের পরও গণহত্যাকারীদের বিচার করা গেল না। গণহত্যার বিচার যদি হয় বিশ্বসমাজের অঙ্গীকার তবে এ ক্ষেত্রে নতুন ভাবনা ও নতুন পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে।
গণহত্যার সূত্র ধরে জেগে উঠছে মার্কিন প্রশাসন তথা নিক্সন-কিসিঞ্জারের ভূমিকা। আমরা যদি অতীত থেকে শিক্ষা নিতে চাই তবে এই ভূমিকার আরও গভীর বিচার-বিশ্লেষণ প্রয়োজন হবে। দ্য ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার বইয়ে ক্রিস্টোফার হিচেন্স দেখিয়েছেন কিসিঞ্জারের হাতে কেবল বাংলাদেশের গণহত্যার রক্ত লেগে নেই, পূর্ব তিমুর, চিলি, আর্জেন্টিনাসহ কয়েকটি দেশের মানবতাবিরোধী নৃশংসতার পেছনেও কাজ করেছে তাঁর অমানবিক ইন্ধন ও মদদ।
গণহত্যার শিকার মানুষদের স্মরণে কোটি দীপ প্রজ্বলিত হয়েছে বাংলাদেশে। এই অগ্নিশিখা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দায়। আমাদের প্রত্যাশা, গণহত্যাকারীরা যেন পার পেয়ে না যায়, বিশ্ব সম্প্রদায় যেন তাদের নিন্দাবাদে মুখর হয়, তাদের ঘৃণা করতে শেখে, তাদের প্রতি ধিক্কার জানাতে পারে। সাম্প্রতিক কালে প্রকাশিত বইপত্র গবেষণাকর্মে আবার ফিরে আসছে একাত্তরের গণহত্যার বিষয়টি, কেন কীভাবে এই গণহত্যা সংঘটিত হতে পারল, সেটা নিয়ে উঠছে বিতর্ক এবং মার্কিন প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে নানাভাবে।
বিশ্বের অনেকেই যেমনÑ গ্যারি জে ব্যাস, শ্রীনাথ রাঘবন, সলিল ত্রিপাঠী, বীণা দি কস্তা, নয়নিকা মুখার্জি প্রমুখ বাংলাদেশের গণহত্যা উপজীব্য করে তথ্যসমৃদ্ধ বই আমাদের উপহার দিয়েছেন। এর আগে লিও কুপার, আর. জে. রামেল, স্যামুয়েল টোটেন প্রমুখের বইয়ে একাত্তরের গণহত্যার সবিস্তার উল্লেখ আমরা দেখতে পেয়েছি। তবে সেসব ছিল ব্যতিক্রম। গণহত্যা-বিষয়ক বহু তাৎপর্যপূর্ণ প্রকাশনায় বাংলাদেশের গণহত্যা হয় একেবারে উপেক্ষিত হয়েছিল, কিংবা সামান্যই উল্লিখিত হয়েছিল। সে অবস্থার অবসান ঘটিয়ে গবেষক-মহলে একাত্তরের গণহত্যা ক্রমে স্বীকৃতি অর্জন করছে। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলারসের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে বেশ কয়েক বছর যাবৎ তিন-চারটি গবেষণাপত্রে উদ্দিষ্ট হয়েছে একাত্তরের গণহত্যা। ইয়েল ল’ স্কুলের হিউম্যান রাইটস ক্লিনিক ১৯৭৩ সালের আইন দ্বারা ১৯৭১ সালের অপরাধের বিচার আয়োজনের আইনগত বৈধতার প্রশ্নে অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের অবস্থান বিশ্লেষণ করে তাদের ইতিবাচক পর্যবেক্ষণ মেলে ধরেছেন। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলির আইন বিভাগ নারী নির্যাতনের বিচারকালে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রেজিস্ট্রারের কাছে মেলে ধরেছিল। এ মুহূর্তে কানাডা, আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও জার্মানির খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থী বাংলাদেশের গণহত্যা ও বিচার বিষয়ে গবেষণার কাজ করছেন। একাত্তরের গণহত্যা আবার নতুন করে বিশ্বসমাজের দৃষ্টিতে উদ্ভাসিত হচ্ছে। ইতিহাসের এই স্বীকৃতি অর্থময় করে তুলতে আমাদের অনেক কাজ রয়েছে। বাংলাদেশের গণহত্যা বিষয়ে নিবিড় অধ্যয়ন, বিশ্লেষণ, গবেষণা, পর্যালোচনা থেকে এর মূল শিক্ষা অনুধাবন এবং তার ভিত্তিতে গণহত্যার মতো নিষ্ঠুরতার চির-অবসান ঘটিয়ে সভ্যতার অগ্রগমনে আমাদেরও যোগ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।
পৃথিবী প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। পরিবর্তিত হচ্ছে জীবন-জীবিকা-জলবায়ু। জলবায়ুর পরিবর্তন পৃথিবীবাসীকে এই মুহূর্তে দারুণভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। মানুষের এখন উচিত মারণাস্ত্র না বানিয়ে জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে চিন্তাভাবনা করা। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পৃথিবীতে মানুষ বাড়ছে কিন্তু জমি বাড়ছে না। কিভাবে মানুষের জন্য গুণগত মান সমৃদ্ধ উন্নত খাদ্য উৎপদন করা যায় তা নিয়ে গবেষণা করা দরকার। এ বিষয়ে নভোচারীদের জন্য ব্যবহৃত খাদ্য দ্রব্যের কথাও স্মরণে রাখা যেতে পারে। পারমাণবিক বোমা, হাইড্রোজেন বোমা, ওয়ারহেড মিসাইলÑ এগুলো না বানিয়ে বৈশ্বিক জলবায়ুর উষ্ণায়ন এবং অন্যান্য মৌলিক চাহিদার দিকে নজর দেওয়াই এখন মঙ্গল হবে।
পরিশেষে বলতে চাই ক্ষুদ্র আয়তনের বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। এগুলোর মধ্যে আছে ’৫২ সালের ভাষা আন্দোলন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ইত্যাদি। আমরা দাবি করছি বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ থেকে শুরু হয়ে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণহত্যা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাক। এটি এখন সময়ের দাবি। এই দাবি পূরণ হলে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সংঘটিত গণহত্যাও ঐতিহাসিক মূল্য পাবে।
০২ ডিসেম্বর, ২০১৭

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ : ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যে অন্তর্ভুক্তির দাবি

রাজা পূজিত হন স্বদেশে কিন্তু প-িত সম্মান পান সর্বত্রÑ এমন একটি কথা আমাদের দেশে প্রচলিত আছে। কথাটি মিথ্যা নয়। পৃথিবীতে এমন অনেক প-িত মানুষ আছেন যারা স্বদেশের সীমানা অতিক্রম করে বিদেশের মাটিতেও সমান শ্রদ্ধেয় আর জনপ্রিয়। যে রাজার মনীষায় পা-িত্য যোগ হয় তিনি হয়ে ওঠেন বিশ্ব বরেণ্য, চিরনমস্য। এমন রাজা বা নেতার উদাহরণ হলেন প-িত জওহরলাল নেহরু, উইনস্টন চার্চিল, আব্রাহাম লিংকন, জর্জ ওয়াশিংটন, ভ. ই. লেলিন, নেলসন ম্যান্ডেলা, বঙ্গবন্ধু প্রমুখ।
এই মানুষগুলো শুধু নেতাই ছিলেন না, জ্ঞানী হিসাবেও সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাদের প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও সংবেদনশীলতা তাদের কাল থেকে মহাকাল জয়ী করে তুলেছে। তারা জন্মেছিল কোনো একটি নির্দিষ্ট ভূখ-ে কিন্তু লালন করতেন বিশ্বমানবতা, পৃথিবীর আর্ত ও পরাধীন মানুষের মুক্তির জন্য তাদের মন সবসময় বেদনাতুর হয়ে থাকত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (১৯২০-১৯৭৫) স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও মুক্তিদাতা। একাধারে তিনি নেতা, মনীষী ও মানবতাবাদী কর্মী পুরুষ। পরাধীন বাঙালি জাতিকে তিনিই দেখিয়েছিলেন স্বাধীনতার স্বপ্ন। শুধু স্বপ্নই দেখাননি, সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়ে বিশ্ব সভায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন অসংখ্য ভাষণ দিয়েছেন। কিন্তু যে ভাষণ দিয়ে তিনি নিপীড়িত বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতা অর্জনে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, সেটি হলো ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ। এটি তিনি ঢাকার বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে দিয়েছিলেন। বলা হয়ে থাকে, ৭ মার্চের ভাষণ দান কালে রেসকোর্স ময়দানে ১০ লক্ষ লোক উপস্থিত হয়েছিল। মাত্র আঠারো মিনিটের জ্বালাময়ী ভাষণ শুধু সেদিনের মুক্তিপাগল মানুষকেই মুক্তির জন্য উদ্বুদ্ধ করেনিÑ মেজর জিয়া, মেজর শফিউল্লাহসহ, আর্মি, ইপিআর, পুলিশ অনেকেই বলেছিলেন ৭ মার্চের ভাষণ ছিল আমাদের জন্য গ্রিন সিগন্যাল। তার ৭ মার্চের ভাষণ পরবর্তীতে নতুন প্রজন্মকেও দারুণভাবে নাড়া দেয়। এখনও তার ভাষণ তরুণ প্রজন্মকে শৃঙ্খল ভাঙার প্রেরণা জোগায়। এ প্রসঙ্গে আমার দুটি ঘটনার কথা মনে পড়ে। বর্তমান জাসদ নেতা মহীউদ্দীন খান বাদলের ছেলে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে এতটাই আবেগতাড়িত হয়ে গিয়েছিল যে, সে তার বাবাকে (মহীউদ্দীন খান বাদলকে) বলেছিল, ‘বাবা তোমরা কি এই লোকটার বিরুদ্ধে গিয়ে নতুন দল জাসদ করেছিলে? ‘আই হেট টু টক টু ইউ ফাদার’Ñ এ কথার সত্যতা কতটুকু তা জানার জন্য আমি বাদলের সাথে কথা বলে জেনেছি, ঘটনাটা সত্য। প্রয়াত সাংবাদিক সন্তোষ গুপ্তের লেখায়ও এই গল্পটি পড়েছিলাম।
আরেকটি ঘটনাও ঠিক একই রকমের। আমাদের বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনে আনান নামের এক কিশোর মাঝে মাঝে আসে। সে ভালোবেসে আমাকে ‘বন্ধু’ বলে ডাকে। একদিন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুনে সে তার মাকে বলে, ‘মা জান বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে আমার রক্ত গরম হয়ে যায়; আমার গায়ের লোম খাড়া হয়ে ওঠে।’ যে ভাষণের সংগ্রামী বাণী নাবালক শিশুকেও আলোড়িত করে, সেই ভাষণ পরাধীন মানুষকে শেকল ভাঙার শক্তি জোগাবে এটাইতো স্বাভাবিক।
জ্যাকব এফ ফিল্ড ২০১৩ সালে গ্রেট ব্রিটেন থেকে একটি বই প্রকাশ করেন ‘উই শ্যাল ফাইট অন দ্য বিচেস’ (ডব ংযধষষ ভরমযঃ ড়হ ঃযব ইবধপযবং) নামে। এই বইটির উপশিরোনাম হলো ‘ঞযব ংঢ়ববপযবং ঃযধঃ রহংঢ়রৎবফ যরংঃড়ৎু’. এই বইয়ে জ্যাকব এফ. ফিল্ড বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিদের ৪১টি ভাষণ সংকলিত করে ইংরেজিতে প্রকাশ করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৪৩১ অব্দ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বনেতৃবৃন্দের ঐতিহাসিক ভাষণগুলো এতে স্থান পেয়েছে। বইটির নামকরণ করা হয়েছে ১৯৪০ সালে প্রদত্ত উইনস্টন চার্চিলের বিখ্যাত ভাষণের শিরোনাম অবলম্বনে। এই গ্রন্থে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি প্রায় ৫০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। পৃথিবীর আর কোনো ভাষণ এতগুলো ভাষায় অনূদিত হয়েছে কি-না, এই মুহূর্তে তা আমার জানা নেই। পৃথিবীর এতগুলো ভাষায় যে ভাষণ অনূদিত হতে পারে সে ভাষণের গুরুত্ব কতখানি তা সহেজই অনুমেয়।
৭ মার্চের সংক্ষিপ্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু পুরো বাঙালি জাতির ইতিহাসকে বাঙালি জাতি তথা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন। একটি জাতির সমগ্র ইতিহাসকে ধারণ করে এমন আবেগময়ী ভাষা ও ভঙ্গিতে পৃথিবীর আর কোনো নেতা ভাষণ দিতে পারেননি। আমরা আব্রাহাম লিংকনের গেটিসবার্গ বক্তৃতা বলি আর মার্টিন লুথার কিংয়ের ‘আই হ্যাভ এ ড্রিমের’ কথাই বলি, পৃথিবীর কোনো নেতার ভাষণই বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মতো এত আলোড়ন আর স্বাধীনতার স্বপ্ন তৈরি করতে সক্ষম হয়নি। এমন ইতিহাসসমৃদ্ধ কাব্যিক ভাষণ একমাত্র বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দেওয়াই সম্ভব হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আগে ও পরে আর কোনো বাঙালির ভাষণ বিশ্ববাসীর এত মনোযোগ আকর্ষণ করেনি। বঙ্গবন্ধুই সেই বাঙালি নেতা, যিনি একটি ভাষণেই একটি পরাধীন জাতিকে অমূল্য স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন।
মাত্র পঞ্চান্ন বছরের জীবনে বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষার জন্য বঙ্গবন্ধু অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন। যেগুলো একজন বাঙালির জন্য অত্যন্ত অহংকারের ও গর্বের। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের উত্তরাধিকারী হিসাবে আমাদেরও কিছু করণীয় রয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতি।
আজ আমাদের মাতৃভাষা বাংলার ঐতিহাসিক সংগ্রাম ইউনেস্কো স্বীকৃত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদায় বিভূষিত। রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে বঙ্গবন্ধু সোচ্চার ছিলেন এবং তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দিয়ে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তারই সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বাংলা ভাষা আন্দোলনের ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পরিগণিত হয়। বাংলাদেশের ষোলো কোটি বাঙালি ও পৃথিবীর বাংলাভাষী জনগণের পক্ষ থেকে আজ দাবি জানাতে চাইÑ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকেই ইউনেস্কোঘোষিত বিশ্বঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হোক। যে ভাষণ একটি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে স্বাধীন জাতিতে পরিণত করেছে, যে ভাষণ বিশ্বের ৫০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে, যে ভাষণ শুনে এখনও আবেগতাড়িত হয় অবুঝ কিশোররা, সে ভাষণ সংগত কারণেই ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্বঐতিহ্যের অংশ হওয়ার দাবিদার। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্বঐতিহ্যে স্থান পাওয়ার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। তাহলে আমাদের দেশ ও জাতি সম্মানিত হবে। মহিমান্বিত হবে বঙ্গবন্ধুর প্রিয় বাংলা ভাষা ও সোনার বাংলাদেশ।
৪ মার্চ, ২০১৬

খালেদা জিয়ার অতীত-ভুলই বর্তমানে কান্নার কারণ

পত্রিকা কিংবা টেলিভিশন খুললেই এখন খালেদা জিয়ার অশ্রুসজল ছবি দেখা যায়। এক সময়ের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির বর্তমান চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার এই কান্নাবিজড়িত মুখ কারো কারো মনে যে সহানুভূতির উদ্রেক করছে না এমন কথা বলা যাবে না। কেন খালেদা জিয়ার চোখে আজ বাঁধভাঙা জল এ কথার কারণ সন্ধান করতে হলে অবশ্যই আমাদের অতীত ইতিহাস স্মরণ করা দরকার। কেননা খালেদা জিয়ার কান্নার কারণ মূলত তার অতীত দিনের সীমাহীন ভুল।
১৯৭১ সালে খালেদা জিয়া ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হেফাজতে ছিলেন। জিয়া তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য একাধিকবার লোক পাঠালেও তিনি পাকিস্তানি সেনাদের সাহচার্য থেকে জিয়ার ডাকে সাড়া দেননি। স্বামীর সংসারে যাননি। এই জন্য পাকিস্তানপ্রীতি তার মনে এমনভাবে শেকড় গেড়েছে যে, আজো তার মূলোৎপাটন হয়নি।
যেই মামলার হাজিরা দিতে গিয়ে আজ তিনি চোখের জল আর নাকের জল এক করে ফেলছেন সেই মামলা হয়েছিল ফকরুদ্দিন-মঈনউদ্দীন-ইয়াজুদ্দিনের কেয়ারটেকার সরকারের আমলে। কেন সেই মামলা হয়েছিল তাও বাংলাদেশের জনগণ অবগত। খালেদা জিয়া বার বার কোর্ট বদল করে দিনের পর দিন কালক্ষেপণ করে এখন যদি মায়াকান্না করে জনগণের মন ভুলাতে চান, বাংলাদেশের জনগণের মন কি তাতে ভুলবে? এদেশের জনগণ কি এতই বোকা?
পাকিস্তানি কূটকৌশল ও সামরিক কায়দায় জেনারেল জিয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেও তিনি আর্থিকভাবে তৎকালীন কতিপয় লোভী রাজনৈতিক নেতা কেনা ছাড়া খুব একটা দুর্নীতির বদনাম কামাই করেননি, কিন্তু খালেদা জিয়া জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে স্বাধীন বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসে জিয়ার ভাঙা সুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জিকে কোন জাদুবিদ্যার বলে হাজার হাজার কোটি টাকায় রূপান্তরিত করেছেনÑ তা বাংলাদেশের মানুষ আজ বুঝতে পেরেছে।
খালেদা জিয়ার দুটি পুত্র সন্তান দুর্বৃত্তপনায় এদেশের মানুষের কাছে মডেল হয়ে আছে। কোকো ১, ২, ৩, ৪ জাহাজ, খাম্বা তৈরি, ড্যান্ডি ডাইং, হাওয়া ভবন, খোয়াব ভবন শুধু খালেদা জিয়ার সন্তানদেরই কলঙ্কিত করেনি, সেই কালিমা খালেদা জিয়ার মুখেও কিছুটা লেগেছে। জিয়া দম্পতির হিতাহিত জ্ঞানশূন্য পুত্রদ্বয়ের পাহাড়সমান লোভ ও পাপ আজ কান্নার ঝরনা হয়ে বের হচ্ছে খালেদা জিয়ার চোখ দিয়ে।
বলতে কোনো দ্বিধা নেই খালেদা জিয়া একদা সাধারণ গৃহবধূ ছিলেন। এই সামান্য পরিচয়টুকুই তার নিয়তি ছিল, কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাঁর ¯েœহের স্পশর্ দিয়ে খালেদা জিয়াকে ধন্য করেছিলেন। খালেদা জিয়া নিশ্চয়ই জানেন আজ তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা তার পক্ষে কোনোদিনই সম্ভব হতো না, যদি জেনারেল জিয়ার হাতে তাকে মুক্তিযুদ্ধের পরে বঙ্গবন্ধু কন্যাজ্ঞানে তুলে না দিতেন। অথচ কি আশ্চর্য! আজ তিনি ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে কল্পিত জন্মদিনের কেক কেটে শুধু নিজেকেই প্রশ্নবিদ্ধ কনেনি, রীতিমতো কৃতঘœ বলে দেশের মানুষের কাছে পরিচিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শুধু জাতির পিতাই নন, এক অর্থে তিনি খালেদা জিয়ারও পিতৃসম। পিতাকে সম্মান করলে সন্তানের সম্মান বাড়ে। পিতার অপমানে সন্তানও অপমানিত হয়। এই সাধারণ কথাটি খালেদা জিয়ার স্মরণ রাখা উচিত।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস যারা জানেন, তারা নিশ্চয়ই মনে করতে পারবেন পঁচাত্তর পরবর্তী জিয়া সরকার অবৈধ ছিল। এই অবৈধ জিয়া সরকার সারাদেশে সৃষ্টি করেন এক দুর্বিষহ আতঙ্ক, তার সীমাহীন নির্যাতনে জেলখানা ভরে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী দ্বারা। কেউ কেউ চলে যান আন্ডার গ্রাউন্ডে। আন্ডার গ্রাউন্ডেও যখন সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়, তখন তারা বাধ্য হয় হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে দেশ ত্যাগ করতে। জিয়ার শাসনামলে প্রতি রাতে কারফিউ থাকতো। তথাকথিত ক্যু-এর দোহাই দিয়ে শত শত সেনা সদস্য হত্যা করা হয়। জনজীবন ছিল চরম অনিরাপত্তার ভেতর। খালেদা জিয়ার শাসনামল জিয়ার শাসনামলের চেয়ে কোনোক্রমেই কম ভয়ঙ্কর ছিল না। তিনি ও তার পুত্র তারেক জিয়া শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য হাত মিলান মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী উগ্রধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে। ২১ আগস্ট বোমা হামলা বাংলার ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক ঘটনা। এই ঘটনার ছক কষা হয়েছিল হাওয়া ভবনে বসে। ২১ আগস্ট ট্র্যাজেডির যারা নায়ক ছিল সেই মুফতি হান্নান গংদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য খালেদা জিয়ার প্রশাসন তৎপর ছিল। সেদিন যদি শেখ হাসিনা ও তার দলের প্রজ্ঞ নেতাকর্মীরা সকলেই নিহত হতেন আজ বাংলাদেশের অবস্থা ছিন্ন রকম হতো। খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে সুখের হাসি হাসতে অথচ বিধি বাম হলেন। তিনি এখন চেষ্টা করেও হাসতে পারছেন না। কান্নাই এখন তার সব সময়ের সঙ্গী। খালেদা জিয়ার কান্নার জন্য তিনি ও তার অর্বাচীন পুত্রদ্বয়ই দায়ী। একটি প্রবাদ আছেÑ ‘যত হাসি তত কান্না বলে গেছেন রাম শর্মা।’ খালেদা জিয়ার জীবনে এই অমর প্রবাদ সর্বাংশে সত্য হয়ে দেখা দিয়েছে।
বিএনপির জন্ম হয়েছিল সেনানিবাসে। এই পার্টি মূলত রাজাকার, আলবদর, আলশামস, মুসলিম লীগ, চীনাপন্থী-ন্যাপ, সুবিধাবাদীদের নিয়ে গঠিত ওরস্যালাইন পার্টি। বিএনপি যে একটি নেতৃত্বহীন, স্বার্থলোভীদের দল এ কথা খালেদা জিয়া আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। কোথয় আজ তার হারিস চৌধুরী? খাম্বা মামুনও হারিয়ে গেছে চোরা পথের বাঁকে। খালেদা জিয়া ডাক দিলে আজ তার সবচেয়ে কাছের নেতাও আসতে রাজি হন না বা রাজি হলেও আমতা-আমতা করে রাজি হন। এটা কি প্রমাণ করে? প্রমাণ করে যে, বিএনপি নেতারা আদর্শে উদ্বুদ্ধ নয়, উদ্বুদ্ধ হয় ক্ষমতার লোভে, এটা যে কোনো রাজনৈতিক দলের জন্যই খুব মারাত্মক ব্যাপার।
আজকের বাংলাদেশ আর ’৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশ মোটেই এক জিনিস নয়। দুই সময়ের বাংলাদেশের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। খালেদা জিয়া এখনো স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশ পাকিস্তানি ভাবধারায় চলবে। এদেশে বারবার সামরিক সরকার আসবে। উগ্র মৌলবাদ কায়েম হবে, ভূলুণ্ঠিত হবে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ। কিন্তু তিনি জানেন না বাংলাদেশের মাটিতে আর কখনোই পাকিস্তানিদের কূটকৌশলের বীজ অঙ্কুরিত হবে না। খালেদা জিয়া যতই দেশবিরোধী চক্রান্ত করুক না কেন, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান যতই তিনি সাফাই গান আর তাদের মন্ত্রী বানান না কেন কিছুতেই এখন তিনি শেষ রক্ষা করতে পারবেন না। তার সুন্দর মুখের আড়ালে কি যে একটা কুৎসিত মুখোশ আছে সেটা যারা না দেখেছে তারা কোনোদিনই বুঝতে পারবে না, খালেদা জিয়া আসলেই কত হিং¯্র আর ভয়ঙ্কর নারী। তিনি পারেন না, তার পুত্র তারেক রহমান পারেন নাÑ এমন কোনো কাজ পৃথিবীতে নেই। আজ তার একপুত্র দুর্নীতি ও অপকর্মের দায়ে দেশ ছাড়া, আরেক জন ড্রাগস খেয়ে খেয়ে পরলোকগত, দলীয় নেতাকর্মীরা দলছুট। দলও অপ্রতিরোধ্য ভাঙনের মুখেÑ এসব থেকে খালেদা জিয়া যদি এখনো শিক্ষা না নেনÑ তাহলে তার চোখের জল আর কখনো ফুরাবে বলে অন্তত আমার মনে হয় ন। প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, অলি আহাদ-এর মতো লোক তারেক জিয়ার কারণে হেনস্থা ও অপমানিত হয়ে বিএনপি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
ব্রেখট-এর নাটকের ঘোড়ার মত জিয়া ছিলেন বন্দুক কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সেনা সর্দার। বন্দুকই ছিল তার বল। বন্দুক ছাড়া দেশ চালানো তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। খালেদা জিয়াও জনতার সমর্থনের চেয়ে বন্দুকের শক্তিকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তিনি ক্যান্টনমেন্টে বসে দেশ শাসন করেছেন। বন্দুক খালেদা জিয়াকে রক্ষা করতে পারেনি, দুর্নীতি করে উপার্জিত অর্থও তার কোনো কাজে আসেনি। সবাই এখন বলাবলি করছে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ফেরার জন্য উন্মাদ হয়ে গেছেন। যে প্রকারেই হোক ক্ষমতা তার চাই-ই চাই। খালেদা জিয়া যদি ক্ষমতা সত্যি সত্যিই চানÑ তাহলে তার উচিত কান্না না করে কৌশল উদ্ভাবন করা। এমন কৌশলÑ যা বাংলাদেশের মানুষ আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে। রাজাকারের সঙ্গ তার পরিত্যাগ করা উচিত। জনতার সামনে ক্ষমা চাওয়া উচিত পূর্বে কৃত অপরাধ ও দুর্নীতির জন্য। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে পাকিস্তানের স্বার্থ উদ্ধার করতে তিনি আদাজল খেয়ে নেমেছেন। তার এই মনোবৃত্তিও পরিহার করা দরকার। সর্বোপরি পুরাতন পলিসি বিসর্জন দিয়ে নতুন চিন্তা, নতুন দেশপ্রেম নিয়ে তাকে এগিয়ে যাওয়া দরকার। কিন্তু চোরা কি ধর্মের কাহিনী শুনবে! নির্বাচনীকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা সহায়ক সরকারের কথা তিনি আজ বলছেন কোন্ মুখে। তিনি ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথা ভুলে গেছেন! শিশু আর পাগল ছাড়া নির্দলীয় কেউ ননÑ এসব তারই কথা।
এরশাদবিরোধী তিন জোট গঠনকালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আবদুর রাজ্জাকসহ আমার তিনবার বৈঠক করার সুযোগ হয়েছিল। প্রথমবার জেনারেল মাজেদুল হকের বাসায়, তারপর পরিবাগে এক নেত্রীর বাসায় এবং ধানমন্ডির চার নম্বর সড়কে এক নেতার বাসায়। প্রথমবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে শাহীনা খান, দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার খালেদা জিয়ার সঙ্গে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ছিলেন। তার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছিল তিনি একজন স্বশিক্ষিত নারী। তিনি অনেক কিছুই বুঝেন, তবে নিজের লাভ একটু বেশি বেশি বুঝেন। আজ অনেকেই বলছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন দারুণ শূন্যতা চলছে, কোনো বিরোধী দল নেই, প্রতিবাদ করার কেউ নেই, দেশের এ অবস্থা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। যারা মনে করেন, বিরোধী দল মানে সংসদ বর্জন, হরতাল-অবরোধ পেট্রোল বোমা, আগুন সন্ত্রাস, নির্বিচারে মানুষ হত্যাÑ আজ তাদের উপলব্ধি করার সময় এসেছে তাদের সেই পলিসি জনগণ ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
খালেদা জিয়ার জীবনটাই নাটকীয়তায় ভরা। একের পর এক নাটক জন্ম দেওয়াই তার প্রধান কাজ। কখনো তিনি ট্র্যাজেডির জন্ম দেন, কখনো তৈরি করেন মেলোড্রামার দুর্বল চিত্রনাট্য। তার আমলে অসংখ্যবার শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা ও জজ মিয়া নাটককে আমরা ট্র্যাজেডি বলেই আখ্যা দিতে পারি। তদ্রƒপ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ত্রাণ বিতরণ করতে যাওয়া রূপ নিয়েছে মেলোড্রামায়। তিনি শনিবারে ঢাকা থেকে সড়কপথে যাত্রা করে কক্সবাজারের উখিয়ায় পৌঁছান সোমবার। পথের মাঝখানে আবার একটু ভাঁড়ামোও দেখালেন দলীয় নেতাকর্মী দ্বারা। পত্রিকায় ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতে পাচ্ছি খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা করিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নেতা ডা. শাহাদাৎ হোসেন। ওই নেতা যাকে দিয়ে এই হামলা করিয়েছেন তিনি একজন জামায়াত-শিবিরের কর্মী। ম্যাডামের গাড়িতে ঢিঁল না মেরে সাংবাদিকের গাড়ি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন ডা. শাহাদাৎ। ঘটেছেও তাই। খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা হলো, অথচ খালেদা জিয়ার গায়ে একটা টোকাও পড়ল নাÑ এটা কি সম্ভব? খালেদা জিয়া ভাগ্যবান নারী। যত ঝড়ই এসেছে কখনোই তার গায়ে ফুলের টোকাটিও লাগেনি। অথচ অন্য নেত্রী শেখ হাসিনার জীবন গ্রেনেড-বোমা-ষড়যন্ত্রের ভেতর দিয়েই প্রতিমুহূর্তে বয়ে চলেছে।
একটু মনোযোগ দিয়ে শুনুন বেগম খালেদা জিয়াÑ ‘ফাঁকি দিয়ে, চালাকি করে জগতে মহৎ ও বৃহৎ কাজ করা যায় না।’ জীবন নাটকের কুটিল দৃশ্যগুলো বাদ দিয়ে এবার বিবেকচরিত্রে আবির্ভূত হোন। নাটকীয়তা, ষড়যন্ত্র, লোক দেখানো মায়া কান্নাÑ এসব বাদ দিয়ে মানুষের কথা বলুন, সহজ ও সরল পথে চলুন। এখনও যদি খালেদা জিয়ার শুভবুদ্ধি উদয় না হয়, এখনও যদি তিনি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা বুঝে উদার গণতন্ত্রের পথে না হাঁটার চেষ্টা করেন, তাহলে বিপদ তার আরো বাড়বে। জল জমে জমে তার চোখ দুটো হয়ে উঠবে দুঃখের দিঘি। সময় থাকতেই তিনি এখন সাবধান হবেনÑ এমনটাই তার কাছে প্রত্যাশা।
৩১ অক্টোবর, ২০১৭

Cold War Past & Present

Mikhail Gorbachev’s perestroika of a decent standard of living for all Soviet People was misunderstood. This is the man who pulled the world several steps back from the Nuclear War brink and lifted a crashing fear from his countrymen and people around the globe. He ended bloody Afghan adventure and Liberated Eastern Europe.
After the Berlin Wall crumbled in 1989. It was in the post-unification period that a new Russia and eastern Europe a proverb was born : “Everything the communist said about communism was a lie, but everything they said about Capitalism turned out to be the truth.”
In first cold war period basic problem was that Americans had great difficulty in believing that USSR mean well. The early American involvement in Vietnam can be marked by two things in particular : (1) Helping the France imperialist in their fight against the forces led by Ho Chi Minh of North Vietnam and (2) The cancellation of the elections that would have United North & South Vietnam as one nation because the USA and its South Vietnam allies knew that HO Chi Minh would win. It was that simple. America lost 58,000 soldiers in Vietnam and they died defending freedom. No freedom was defended. Freedom was destroyed. A peasant country was invaded and millions of its people were killed, maimed, dispossessed, poisoned, 60,000 of the invaders took their own lives.
Nothing of good faith or decency in that scenario. No misunderstanding. Ho Chi Minh was a great admirer of America and its declaration of Independence. His own actual declaration of 1945 begins with the familiar “All men are created equal. They are endowed by their creator with certain inalienable rights, among these are life, liberty and the pursuit of Happiness. But Ho Chi Ming was what was called a ‘Communist’. It was that simple, which was one of cause of first Cold War Era.”
Present cold war era will end by Nuclear War. We have all got to die one day, some sooner and some later. The trouble always has been that we are never ready, because we don’t know when it is coming. Well, now we know nothing to be done about it.
If there is a nuclear war it will end in a month. The United States, Russia & China will be the protagonist. It is not clear if it will start by accident or mistake. There will be no victor. The northern hemisphere is contaminated and lifeless now.
‘This is the way the world ends
Not with a bang but a whimper.’
The lines form T. S. Eliot’s poem published in 1957 at the height of the cold war when too many writers were silent or cowed, it is a masterpiece.
As the US congress passed a law to wage economic War on Russia, the world’s most lethal Nuclear Power. There was no justification for this insane vote, except the promise of plunder. The sanctions are aimed at Europe too, mainly Germany, which depends on Russian natural gas and on European companies that do legitimate business with Russia. The main aim seems to be war- real war. No provocation as extreme can suggest anything else. They seem to crave it, even though Americans have little idea what war is. the civil war of 1861-5 was the last on their mainland. War is what the United States does to others. America is the only nation to have used nuclear weapons against human beings. They have since destroyed scores of governments many of them democracies and laid to waste whole society – the million death in Iraq, Libya were a faction of carnage in Japan and Indo-China etc.
They have encircled Russia & China with missiles and nuclear arsenal. They have used neo-Nazis to install an unstable aggressive regime on Russians borderland- the way through which Hitler invaded, causing the death of 27 million people. There goal to dismember the, modern Russia Federation. The threat is simultaneous, Russia is first, China is next.
The whole world is volatile, we don’t know whether the Era of crusade will come again or the plague of Nationalism will develop, like the people of Catalonia, who are seeking independence from Spain. There are many other restive independence movements in the world, like the Kurds in Iraq & Turkey, in Scotland, Belgium, Italy and California.
After the fall of Saddam Husain in Iraq on the plea of Weapons of mass destruction. There was a country called Libya, it had the highest standard of living in all of Africa, its people had not only free education & Health care but all kinds of other benefits, other African countries could only dream about. It was a secular state, a quality 7 to be cherished in Africa & Middle East. But Moammar Gaddafi of Libya was have a properly obedient client of Washington. Amongst other short coming, the man threatened to replace the US dollar with gold for payments of Oil transaction, created a common, African currency and stray supporter of the Palestinian and foe of Israel. In 2011, Secretary of state Hillary Clinton was the Prime moving force behind the United States & NATO turning Libya into a failed states, where it remain today.
Experts say the present world is in the grip of ‘Carnival of bellicosity’- but on that could easily lead to disaster. Almost every week now seems to see new provocations between Donald Trump & Kim Jong-UN. But what do they actually mean? In recent weeks, Mr. Trump has called for “fire and fury like the world has never seen” to be unleashed on North Korea, that have enraged the North Koreans.
Is the world really on the brink of a Third World War? Experts says probably not, a general conscience is that the US President’s statements all just Bluster, although many emphasize the fact that bluster has an unfortunate history of leading to war. How can we stop it? Is a million dollar question.
08 October, 2017

স্ব-ভূমে সসম্মানে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন হোক

পৃথিবী প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, পরিবর্তিত হচ্ছে বিশ্বের ভৌগোলিক বলয়। একদিন যেসব জাতিগোষ্ঠী বীরদর্পে পৃথিবীকে শাসন করতো, আজ তারা অনেকে নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করতেই অস্থির। এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ সা¤্রাজ্যবাদের উদাহরণ দেওয়া যেতেই পারে। তাদের সা¤্রাজ্যে একদিন সূর্যাস্ত যেতো নাÑ আজ যায়। এটাই নিয়ম। পরিবর্তন বা বিবর্তন এভাবেই হয়। আজ যারা আশ্রয়হীন কাল তারা রাজা-মহারাজা হবে, আজ যারা রাজা-মহারাজা আছে কাল তারা ভিক্ষা করবে। ইতিহাসের পাতায় আমরা দেখতে পাই যে, স্পানিস, ফরাসি, পর্তুগিজ, গ্রিক, রোমানÑ কোনো সা¤্রাজ্যই তিনশ’ বছরের বেশি টিকেনি, ব্যতিক্রম কেবল মোঘল সা¤্রাজ্য।
পৃথিবীর দেশে দেশে আজ নানারকম সংকট তৈরি হচ্ছে। এই সংকট কতগুলো অভ্যন্তরীণ সৃষ্ট, কতগুলো বহির্বিশ্বের কূটচাল দ্বারা প্রভাবিত। কাশ্মীর ইস্যু, প্যালেস্টাইন ইস্যু, বসনিয়া হার্জেগোভিনিয়া ইস্যুর কথা অনেকেই জানি। বর্তমানের স্পেনের সমৃদ্ধ অঞ্চল কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিয়েছে ৯০ শতাংশ মানুষ। স্পেন যতই চেষ্টা করুক কিছুতেই ঠেকাতে পারবে না। কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। বছরের পর বছর ধরে এসব স্থানে হত্যাকা- ও সহিংসতা চলছে। মধ্যপ্রাচ্যের ১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সাবরা ও শাতিলার ফিলিস্তিন শরণার্থী শিবিরে চালানো গণহত্যার কথাও জানি। খ্রিস্টান মিলিশিয়া ইহুদিদের প্ররোচনায় সেদিন যে হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়ে ছিল মুসলিম নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের উপর তা অবর্ণনীয়।
বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় পুঁজিবাদী ও সা¤্রাজ্যবাদী শক্তি দেশে দেশে নানারকম সংকট তৈরি করে নিজেদের ফায়দা লুটার অবিরাম চেষ্টা করছে। এর পেছনে অর্থনৈতিক কারণ আছে, আছে কূটনৈতিক ও জিওপলিটিক্যাল কারণ। পুঁজিবাদীরাই মরণাস্ত্র অস্ত্র বানায়। সেই অস্ত্র বিক্রির জন্য তারা নানামুখী সমস্যা তৈরি করে। এমনকি জেনোসাইড বা এথনিক ক্লিনজিং ঘটাতেও তারা দ্বিধান্বিত হয় না। পুঁজিবাদীর কাছে মানুষের চেয়ে মুদ্রার দাম বেশি। তারা মানুষের চেয়ে মুদ্রাকে মূল্যবান ও প্রিয় মনে করে। মুদ্রার জন্য তারা অবলীলায় মানবতা বিসর্জন দিবে এতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই।
সম্প্রতি রোহিঙ্গা সমস্যা সারাবিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে, লাখে লাখে উদ্বাস্তু রোহিঙ্গা নরনারী এসে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ হওয়া সত্ত্বেও যেভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নর-নারীর পাশে মানবিকতার হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়েছে তার কোনো তুলনা হয় না। কেন বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের পাশে এভাবে দয়ার্দ্র হৃদয় নিয়ে দাঁড়ালো তার অনেকগুলো কারণ আছে। এই কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রধান কারণ হলোÑ ১৯৭১ সালে আমরাও শরণার্থী হয়েছিলাম। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সেদিন আমরা আশ্রয় নিয়েছিলাম প্রায় এক কোটি মানুষ। দীর্ঘ নয়টি মাস ভারত আমাদের আশ্রয় দিয়ে, খাদ্য দিয়ে, সেবা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছিল। সেদিনের শরণার্থী শিবিরে আমরা যারা ছিলাম আজ তারা নিশ্চয়ই উপলব্ধি করতে পারছি ১৯৭১ সালে শরণার্থী বাঙালির যে দুর্দশা-দুর্ভোগ ছিল, ২০১৭ সালে এসে রোহিঙ্গারাও পড়েছে একই রকম সংকটের মুখে।
রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর আরেকটি কারণ হলো, আজ যে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে আমরা গর্ব করছি সারা পৃথিবীতে, একদিন সেই সাহিত্যের মানবিক বীজ আরাকানে (বর্তমানে রাখাইন) রোপণ হয়েছিল। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য আরাকানে প্রচার প্রসার লাভ করে মঙ্গলকাব্যের একঘেয়েমি থেকে ভিন্ন স্বাদ এনে দিয়েছিল। অন্য যে কারণটি গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি বিবেচনা করি, সেটা হলো আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ‘মূলনীতি’। বাংলাদেশ কূটনৈতিকভাবে বিশ্বাস করে কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। এই কারণেও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক আদর্শ সমুন্নত রেখেছে বলে আমি মনে করি। মাঝে মাঝে পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও ভুল বোঝাবুঝি হয়, তখন প্রতিবেশীর গৃহে গিয়ে আশ্রয় নেয় কোনো কোনো অসহায় সদস্য। এরপরে সমস্যা সৃষ্টি হওয়া পরিবার ও প্রতিবেশী পরিবারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়, মিটমাট হয় উদ্ভূত সমস্যা। মিয়ানমার ও বাংলাদেশও এখন সেই অবস্থার মধ্যেই আছে। মিয়ানমারে একটি সাময়িক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। মিয়ানমারের লক্ষ লক্ষ অসহায় লোক এসে আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ সাধ্যমত চেষ্টা করছে মিয়ানমারের জনগণ মিয়ানমারের হাতে তুলে দিতে। যতদিন আমরা তাদের সসম্মানে তুলে দিতে না পারি ততদিন তার অসহায় জনগণকে আমাদের আশ্রয়, খাদ্য, সেবা-শুশ্রƒষা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতেই হবে। পত্র-পত্রিকায় দেখছি, রোহিঙ্গা গণহত্যার অনেক রকম সংবাদ। আজকের এই আধুনিক ও মানবতাবাদী সমাজ-কাঠামোর ভেতর থেকে কিভাবে এমন নারকীয় গণহত্যা চলতে পারে তা ভেবেই পাই না। বাংলাদেশ আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী মিয়ানমারে ফিরিয়ে দিতে। হয়তো খুব দ্রুতই এই সমস্যা সমাধান হবে, কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষকে অত্যন্ত ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে।
রোহিঙ্গারা আজ নির্যাতিত, নিপীড়িত এ কথা মিথ্যা নয়। আমরাও একদিন নির্যাতন, নিপীড়ন সহ্য করেছি। দীর্ঘ তেইশ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে স্বাধীনতা লাভ করেছি। আমরা যখন স্বাধীনতার জন্য ছটফট করছিলাম তখন বিশ্বের অনেক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র, যেমন আমেরিকা, চীন বিরোধিতা করেছে। তারা চায়নি আমরা মুক্ত-স্বাধীন স্বদেশে মানুষের অধিকার নিয়ে মানুষের মতো বাঁচি। রোহিঙ্গাদের সঙ্কটও অনেকটা আমাদেরই মতো। চীনা বিনিয়োগের ‘চুম্বুকক্ষেত্র’ বলে রাখাইন অঞ্চলকে মনে করা হয়। চীন রাখাইনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। রাখাইন অধিবাসীদের যদি কৌশলে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া যায় বা নিধন করে শেষ করে দেওয়া যায়Ñ তাহলে চীনের পথের কাঁটা দূর হয়। সিনেমায় বস্তি উচ্ছেদ করে বড়লোকদের কারখানা বানানোর দৃশ্য প্রায়ই চোখে পড়ে। রাখাইন রাজ্যেও চীন সেই দৃশ্যের নাটক সাজিয়েছে যেন। আজ রোহিঙ্গারা লড়াই করছে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য। স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার জন্য। একদিন না একদিন তাদের এই ঐক্যবদ্ধ লড়াই সার্থকতা খুঁজে পাবেই।
ক্রমপরিবর্তনশীল পৃথিবীর ইতিহাস বলছেÑ একটি জাতিগোষ্ঠী যখন তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে ও নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে লড়াই শুরু করে, তখন পৃথিবীর কোনো শক্তিই তাদের কাক্সিক্ষত স্বপ্নকে হত্যা করতে পারে না। হয়তো এ জন্য তাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। ভয়ঙ্কর মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে হয়, কিন্তু পরিণামে তারাই হয় জয়ী। রোহিঙ্গারা কেন, কি কারণে বারবার নিজ বাসভূমি থেকে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে তা আজ সকলেরই জানা। বিশ্বের সকল মানুষই আজ তাদের ব্যথায় সমবেদনা জানাচ্ছেÑ তাদের নির্বিঘেœ জীবনযাপনের জন্য, নিরাপত্তার জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। এটাকে আমি রোহিঙ্গা সংগ্রামের একটি বিজয়পালক বলেই মনে করি।
উগ্রপন্থা দিয়ে পৃথিবীতে কখনোই শান্তি আনা যাবে না। এক সময় বামপন্থীরা উগ্রপন্থা ব্যবহার করে পৃথিবীতে সমাজতন্ত্রের বাতাবরণ তৈরি করতে চেয়েছে কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। মৌলবাদী ধর্মান্ধ জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা, আইএসও উগ্রপথে হেঁটে আজ নিশ্চিহ্ন হওয়ার পরে। বাংলাদেশেও চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় মৌলবাদী উগ্রপন্থীরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল, বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার শক্ত হাতে জঙ্গিবাদীদের দমন করে পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। উগ্রপন্থা পরিহার করে শান্তির পথে হাঁটতে হবে। যুদ্ধ-বিগ্রহ করে শান্তি আনা যায় না, তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ আফগানিস্থান, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, মিশর ইত্যাদি দেশ। মানুষ যদি তার মনুষ্যত্ব জাগাতে না পারে, তাহলে পৃথিবী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যেতে বাধ্য। আমরা অনেক রক্ত দেখেছি, অনেক মৃত্যু দেখেছিÑ মা-বোনের চোখে দেখেছি বিরামহীন অশ্রু ও কান্না। এসব আর দেখতে চাই না।
¯œায়ুযুদ্ধ (Cold war) এ সময়ের বাস্তবতায় জুজুর ভয়ে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর বৃহৎ শক্তি সম্পন্ন পুঁজিবাদী দেশগুলো একের পর এক অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র বানাচ্ছে। এগুলো বিক্রির জন্য তারা দেশে দেশে জঙ্গি সৃষ্টি, গৃহযুদ্ধ বাঁধানো, অভ্যন্তরীণ সংকটসহ নানারকম সংকট তৈরি করে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে পুঁজিবাদী দেশগুলো শোষণের যে অভিনব কৌশল গ্রহণ করেছে তা কখনো স্থায়ী হবে না। বর্তমান পৃথিবী একটি মানবিক বিশ্বব্যবস্থা (Humane World Order) আকাক্সক্ষা করছে। স্বৈরশাসক, একনায়ক, রাজতন্ত্র, সামরিকতন্ত্রÑ এসব আজ আর কারো পছন্দ নয়। যথার্থ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ যখন মানুষের মধ্যে জাগ্রত হবে তখন সমস্ত অন্যায়, সমস্ত দুঃশাসন ভেঙে খান খান হয়ে যাবে। আজ রোহিঙ্গারা স্বভূমি থেকে উদ্বাস্তু হতে পারে, কিন্তু আগামীকাল তারাই হতে পারে মানুষের মঙ্গলকর্তা। ইতোমধ্যে মিয়ানমার তার দৃঢ় অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে বৈশ্বিক চাপে। আমরা আশা করবো, মিয়ানমার শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবে, একটি সুন্দর সমাধানের পথেই হাঁটবে শান্তিকামী মিয়ানমার।
০৪ অক্টোবর, ২০১৭

Globalization Terrorism & Corruption Changed our Planet Earth

For good or for ill, amongst all the current scientifically known solar planets of the universe, the earth is the only habitable planet. This planet—earth—has incredibly changed. On the one hand, everything on it has been or is being globalized, including infamous terrorism. Our world has concretely become a true “global village.” That is why it is now possible for more people than ever to collaborate and compete in real time with more people on more different kinds of work from more different corners of the planet and on a more equal footing than at any previous time in the history of humankind let us put another way, the invention of computers, e-mail, networks, teleconferencing, social media, and dynamic new software have all made it possible for those of us living in the 21st century to achieve so much more than many generations before us. On the other hand, the 21st century is witnessing a situation whereby a whole new group of angry, frustrated and humiliated men and women seek to destroy the rest of us. That is why the change we are experiencing is a dreaded change, because it is not only the good guys—the software writers, computers geeks, business entrepreneurs, politicians, other professionals and so on—who get empowered to collaborate on work in a shrinking and flattening world, but also the bad guys—Yahoo boys, international terrorist groups such as al-Qaeda, ISIS, Boko Haram, Al-Shabab and other terrorist networks. This article attempts to make sense of the connection between a particular form of globalization—corruption—and terrorism. Its focal point is global obsession with a new religion—materialism— and its resultant effects on the human family.
Almost the entire Muslim world is affected by poverty and tyranny. Both of these problems are attributed, especially by those with an interest in diverting attention from themselves, to America—the first of American economic dominance and exploitation, now thinly disguised as “globalization;” the second to America’s support for the many so-called Muslim tyrants who serve its purposes. Globalization has become a major theme in the Arab media, and it is almost always raised in connection with American economic penetration. The increasingly wretched economic situation in most of the Muslim world, compared not only with the West but also with the rapidly rising economics of East Asia, fuels these frustrations. American paramountcy, as Middle Easterners see it, indicates where to direct the blame and the resulting hostility.
A modern example of a way of seeing that encourages corruption of human morals, ethics and spirituality is the modern market system. The modern market system, for instance, places an artificial scarcity at the heart of human existence. It envisages human beings as creatures with insatiable desires. It leads to a conception of human life centered on competition, acquisitiveness and unqualified consumption. As such it militates against other myths, often present in the same society, that speak of the sacredness of nature or the inherent dignity of human beings. By and large, the corruption of morals, spirituality and ethics has left the world very vulnerable.
Terrorism is the cost of corruption that drives home the price every one of us must pay for allowing it to take roots in our global society. It is a disease that is everybody’s business. In the sphere of continental financial system issues, corruption can no longer be by passed as somebody else’s concern. Corruption has turned out to be a topical concern in the highest spheres of national priorities setting. It has shaken the political agenda. Social-economic analysts consider corruption as being institutionalized when lack of integrity has almost reached endemic proportions. The corrosion has amounted to the ultimate penetration of all levels of society, resulting in the deterioration of moral values that sustain the polar of society and search for genuine aspirations. Lack of integrity erodes the moral fabric of society.
Corruption is the clearest connection between globalization and modern terrorism. It is the clearest indication of the failure of the globalists’ dream and its self-serving agenda. Corruption is an exposure of human system designed to force the majority to accept the role of helping only a few elite to maintain the status quo. Terrorism is an upshot of global corruption. The challenge of global corruption is multifaceted. It includes, among other things, corruption of morals, spirituality and ethics. That is why today, our world is profit-driven, self indulgenced, and obsessed with materialism. These theological, moral, ethical and spiritual challenges have left our world without antibodies that will protect it from falling prey to corruption and its twin sister/brother, terrorism. Global corruption is necessitated by the fact that globalization entails a situation whereby humans are increasingly interconnected. It refers to increasing worldwide interconnectedness. Corruption is globalized because globalization generates a variety of interregional and transcontinental relationships embodied in webs or networks of activity, interaction and exchange. Most of the interactions that happen at the global level involve very dubious behaviours by people whose worldview is self-serving; they are full of greed and self-indulgence. Corruption and its correlating link to terrorism are some of the serious evils of globalization.
Certain global beliefs, teachings and practices have made the world ungovernable. The belief in prosperity at all cost has caused many a leader to focus on public dishonest dishonesty, unfaithfulness and obsession with self-centeredness. In other words, the global community is haunted by the beliefs, teachings and practices of an amoral, globalized world.
Going forward we must realize that guns and security intelligence alone cannot save us from terrorism; there must be a genuine return to God, our Creator, Sustainer and Protector.
1) What is the correlation between globalization and terrorism?
2) How is terrorism an exposure of the failure of a self-serving agenda of the social, economic, religious and political engineers of globalization?
Corruption is as old as recorded history finding mention in the ancient Indian treatise Arthashastra (c. 280 BC) and also alluded to as one of the reasons for the fall of the Roman Empire (476 AD). Corruption has therefore been part of our existence leading some to believe that corruption can only be controlled and never eradicated.
Corruption as a subject of legal, sociological, political science and philosophical debate is present throughout the history. Regarding the temporal dimension and content, definitions of corruption can be divided into traditional and contemporary. Generally, there is very little literature on the history of corruption.
Among the definitions of corruption that are most present in the scientific literature and the public are the following:
• Misuse of public resources for personal interests (World Bank);
• Illegality; a vicious and fraudulent intention to evade the prohibitions of the law. The act of an official or fiduciary person who unlawfully and wrongfully uses his station or character to procure some benefit for himself or for another person, contrary to duty and the rights of others.
• Corruption is the abuse of entrusted power for private gain. It hurts everyone who depends on the integrity of people in a position of authority.
Which behaviors are ethical and which are unethical? International society due to globalization has to develop and establish common ethical principles of behavioer in social life taking into account religion and world civilization. The basic values of humans and life as creation have to be identical all over the world, which means that human behavior should be similar all over the world and principles established by different kinds of societies should not alter the basis of values of life and humanity.
Ethical codes are adopted by organizations to assist members in understanding the difference between ‘right’ and ‘wrong’ and in applying that understanding to their decisions. A code of conduct is a set of rules outlining the responsibilities of or proper practices for an individual, party or organization. Related concepts include ethical codes and honour codes.
Wrongdoing on the part of an authority or powerful party through means that are illegitimate, immoral, or incompatible with ethical standards is a definition on corruption. Corruption is now recognized to be one of the world’s greatest challenges. The World Bank has stated that “bribery has become a $1 trillion industry.”
The rapid development of rules of corporate governance around the world is also prompting companies to focus on anti-corruption measures as part of their mechanisms to protect their reputations. The international legal fight against corruption has gained momentum in more recent times through the Organization for Economic Co-operation and Development (OECD) Convention on Combating Bribery of Foreign Public Officials in International Business Transactions and through the entering into force of the first globally agreed instrument, the United Nations Convention against Corruption (UNCAC) in December 2005.
Customs-related corruption costs World Customs Organization members at least $2 billion in customs revenue each year. There are a number of very different reasons for why businesses should combat corruption in all its forms. The ethical case is that corruption is inherently wrong. It is a misuse of power and position and has a disproportionate impact on the poor and disadvantaged. It undermines the integrity of all involved and damages the fabric of the organizations to which they belong. To save our planet & fight corruption we will have to fight against terrorism & globalization in all its forms are simply the right thing to do.
26 August, 2017